নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে | Documents For New Votar ID

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে ১ মিনিটেই জানতে পারবেন। সেই সাথে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত জানতে পারবেন। এতো সহজে বিস্তারিত বলা হয়েছে যে একবার দেখলেই বুঝতে পারবেন। তার আগে সকলেরই জানা উচিত ভোটার আইডি কার্ড বা NID Card আসলে কি ?

ভোটার আইডি কার্ড কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র (NID Card) হচ্ছে বাংলাদেশে বসবাসকারী সকল নাগরিক এর নিজস্ব আইডেন্টিটি। হতে পারে সেই নাগরিক জন্মগতভাবে বাংলাদেশি কিংবা বিদেশে জন্মগ্রহণকারী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন অনুসারে বাংলাদেশে বসবাসকারী সকল প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের জন্য ভোটার আইডি কার্ড কিংবা এনআইডি কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক।

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে
নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে

বাংলাদেশ সরকারের নতুন নিয়ম অনুসারে ১৭ বছরের ঊর্ধ্বে সকল নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা আবশ্যিক। সেই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছর নতুন ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়ে থাকে। প্রতি বছরই কিছু না কিছু নিয়মের সংযোজন বিয়োজন ঘটে থাকে। নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে (কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস) সেই সম্পর্কে আজকের আলোচনা।

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে ২০২৩

  • নতুন ভোটার হতে সকল বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন সনদ, বাবা মার ভোটার আইডি কার্ড, প্রত্যয়ন পত্র এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক সত্যায়িত নাগরিক সনদ পত্রের কপি, শিক্ষা সনদ ইত্যাদি কাগজ লাগে। বিদেশি নাগরিকদের জন্য পাসপোর্ট এর কপি লাগবে সেই সাথে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে দূতাবাসের সার্ভার থেকে তথ্য যাচাই করে মূল সার্ভারে পাঠানো হবে। সেখান থেকে তথ্য মিলিয়ে দেখা হবে এবং অপেক্ষা করতে হবে।

নতুন এনআইডি করতে যে সকল কাগজপত্র লাগবে তার মধ্যে দুইটি ভাগ রয়েছে। যার মাঝে কিছু ডকুমেন্ট বাধ্যতামূলক, তবে কিছু ঐচ্ছিক কাগজও লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট হল রক্ত পরিক্ষার রিপোর্ট। তবে আরও কিছু কাগজের প্রয়োজন হতে পারে। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করলে নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে তা সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে পারা যাবে।

১। জন্ম নিবন্ধন সনদ

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য সর্ব প্রথম যে কাগজটি লাগবে সেটি হচ্ছে আপনার জন্ম সনদ। তবে সাধারণ ডুপ্লিকেট কপি হলে চলবে না। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর সার্ভার কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন জন্ম সনদ কপি থাকতে হবে।

অর্থাৎ ১৭ সংখ্যার জন্ম সনদ লাগবে ১৬ ডিজিট হলে করা যাবে না। তবে এক্ষেত্রে শর্ত সাপেক্ষে প্রথম ১০ সংখ্যার পর ০ যোগ করে ১৭ সংখ্যা করা যায়। না বুঝে থাকলে দেখে নিন কিভাবে ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন করবেন।

২। পিতা মাতার এনআইডি

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে এ বেপার এ বলতে গেলে সর্ব প্রথম যে কাগজ এর কথা বলতে হয় সেটি হচ্ছে আপনার বাবা মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র। এটি থাকা বাধ্যতামূলক কেননা এটি আপনার জন্ম পরিচয় নির্ধারণ করে একইসাথে আপনার বংশ পরিচয়, যার মাধ্যমে সরকার নিশ্চিত হয় যে আপনি এবং আপনার পরিবার বাংলাদেশী নাগরিক।

৩। নাগরিক সনদ

আপনি যে এলাকায় থাকেন সেই এলাকার চেয়ারম্যান কিংবা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নির্ধারিত জন প্রতিনিধি ( মেয়র/কাউন্সিলর) থাকে নাগরিক সনদ পত্রের সত্যায়িত কপি লাগবে বাধ্যতামূলক। তবে ভোটার আগ্রহী প্রার্থী বিদেশি নাগরিক হলে এটি দরকার নেই। কিন্তু দুতাবাস এ প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিতে হবে, তারপর ফ্রিঙ্গার প্রিন্ট দিতে হবে।

৪। ট্যাক্স রশিদ

ট্যাক্স রশিদ কিংবা গ্রাম্য পর্যায়ে আপনার যদি কোন আবাদি জমি থাকে তাহলে তার খারিজের কপি বা দাখিলা জমা দিতে হবে। আর যদি না থাকে তাহলে যে ঘর এ বসবাস করেন সে ঘরের ভিটে মাটির দাখিলা বা খারিজ পত্র জমা দিতে হবে।

৫। বিদ্যুৎ বিলের কপি

সর্বশেষ বাধ্যতামূলক কাগজটি হচ্ছে আপনার ঘরের বিদ্যুৎ বিলের কাগজ। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাগজ যা প্রায় সকল সরকারি সেবার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই অবশ্যই এটি সাথে রাখতে হবে। তবে যদি আপনার হাতের কাছে না থাকে সেক্ষেত্রে গ্যাস বিল এর কপি কিংবা পানি বিলের কপি সাথে রাখলেও চলবে।

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে তা জানলেন। এবার জেনে নিন কিভাবে আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।

এতক্ষণ কিছু বাধ্যতামূলক ডকুমেন্টস এর কথা বলা হল। এসব কাগজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেই নতুন আঙ্গিকে ভোটার আবেদন করা যাবে না। এর পাশাপাশি আরও কিছু দরকারি কাগজের প্রয়োজন হবে। নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে আসা করি এই প্রশ্নটি আর কেও করবে না। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন করতে হয় সেই সম্পর্কে।

নতুন ভোটার হওয়ার নিয়ম ২০২৩

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য প্রথমে services.nidw.gov.bd এই লিংক এ প্রবেশ করতে হবে। তারপর নতুন ভোটার হওয়ার অপশন “আবেদন করুন” বাটনে ক্লিক করতে হবে। তারপর নাম, জন্ম তারিখ ও কাপচা পুরন করে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে আবেদনের ৩ সপ্তাহ থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে মোবাইল এ ম্যাসেজ আসবে। সেটি ব্যাবহার করে পরবর্তীতে আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করা যাবে।

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে
নতুন ভোটার হওয়ার নিয়ম

আপনার ভোটার কার্ডটি সম্পূর্ণ নির্ভুল করতে এসব কাগজ জমা দেওয়ার বিকল্প নেই বললেই চলে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে এই সম্পর্কে আরও বিস্তারিতভাবে।

শিক্ষা সার্টিফিকেট কপি

এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট। যদি থাকে তবে এটি অবশ্যই সংযুক্ত করবেন, কেননা অনেকের সার্টিফিকেটের নাম, পিতার নাম, মাতার নাম এর সাথে সাথে ভোটার আইডি কার্ড এর নাম এর মিল থাকে না। সেক্ষত্রে আপনি এটি কাগজটি জমা দিলে সেই ভুলটি আর হবে না।

এক্ষেত্রে JSC, SSC কিংবা HSC পরিক্ষার সার্টিফিকেট এর যেকোনো একটির স্ক্যান কপি আপলোড করলেই হবে। এই শিক্ষাগত যোগ্যতার কপিটি আইডি কার্ড, জন্ম সনদ সহ এ ধরনের সকল সেবা তে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

প্রত্যয়ন পত্র

চেয়ারম্যান, মেয়র কিংবা ওয়ার্ড কাউন্সিলর কর্তৃক সাক্ষরিত প্রত্যয়ন পত্র দাখিল করতে হবে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য। এদের যেকোনো একজন এর কাছ থেকে সংগ্রহ করলেই হবে।

প্রত্যয়ন পত্রটি অবশ্যই সত্যায়িত থাকতে হবে। প্রত্যয়ন পত্র করতে কোন ধরনের টাকার প্রয়োজন পরে না সেটা জানা সকলের জরুরী। নিজ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এই কাগজটি সংগ্রহ করতে পারেন। তবে ইউনিয়ন পরিষদের আশে পাশের কম্পিউটারের দোকান গুলোতে ৫ টাকা দিয়ে ফরম নিয়ে পুরন করে নিতে হবে।

ব্লাড টেস্ট সার্টিফিকেট

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে এই সম্পর্কে যদি বলতে হয় তাহলে ব্লাড টেস্ট সার্টিফিকেট একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। যদি রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রাপ্ত রক্তের গ্রুপ জানা থাকে তবে তা অবশ্যই উল্লেখ করবেন। কেননা এটি আপনার জীবন বিপন্নের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। কোন রকম রক্ত পরিক্ষা ছাড়াই আপনার রক্তের গ্রুপ জানা যাবে যদি আপনি তাৎক্ষণিক কোন দুর্ঘটনার স্বীকার হন এবং রক্তের প্রয়োজন হয়।

পাসপোর্ট কপি/ ড্রাইভিং লাইসেন্স

আপনার যদি পাসপোর্ট কপি থাকে তবে এটি যুক্ত করতে পারেন। তবে এটি যদিও খুবই কম পরিমান মানুষের হয় যার কিনা এনআইডি কার্ড পাওয়ার আগেই পাসপোর্ট পায়। নতুন ভোটার আবেদনের সময় চাইলে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপিও জমা দিতে পারেন।

এই কাগজগুলো হলে খুব সহজেই বাংলাদেশ সরকারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে নতুন ভোটার এর জন্য আবেদন করা যাবে। তবে মাথায় রাখতে হবে বাধ্যতামূলক কাগজগুলো অবশ্যই সাবমিট করতে হবে। তুলনামুলক কম দরকারি কাগজ যেমন কাবিন নামা, স্বামী/স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্র সংযুক্ত না করলেও হবে। তবে আবশ্যিক ক্ষেত্রে অবশ্যই সংযুক্ত করে দিতে হবে।

তবে যদি ভুল করেই ফেলেন তো চিন্তার কোন কারন নেই। কেননা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন প্রক্রিয়াও এখন অনেক সহজ। আসা করি নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে এ সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানাতে পেরেছি।

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে ?

নতুন ভোটার হতে সকল বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন সনদ, বাবা মার ভোটার আইডি কার্ড, প্রত্যয়ন পত্র এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক সত্যায়িত নাগরিক সনদ পত্রের কপি, শিক্ষা সনদ ইত্যাদি কাগজ লাগে।

নতুন ভোটার হতে কি কি কাগজ লাগে ?

নতুন ভোটার হতে শিক্ষাগত যোগ্যতার কপি, বাবা-মা এর আইডি কার্ড এর কপি, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স (যদি থাকে), রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট, ইউটিলিটি বিলের কপি সহ বেশ কয়েকটি কাগজের স্ক্যান কপি লাগে।

আইডি কার্ড করতে কত টাকা লাগে ?

অনলাইনে আইডি কার্ড সংশোধন করতে ১৫% কর সহ ২৩০ টাকা লাগে। এছাড়া অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য ১১৫ টাকা খরচ হবে। তবে নতুন আবেদন সম্পূর্ণ ফ্রি তে করা যাবে।

Similar Posts

3 Comments

  1. আমার বয়স 28 আমি এখনো আইডি কার্ড করিনি। ঢাকায় আমার পরিবারের সদস্যরা আইডি কার্ড করছে। কিন্তু আমি আমার গ্রামের বাড়ি রংপুরে আইডি কার্ড করতে চাই । কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে করতে পারিনি। ঢাকায় যে এলাকায় থাকি সেখানে আমার জন্ম নিবন্ধন করা হয়েছে। সেই নিবন্ধন বাদ দিয়ে।আমি কি আমার নিজের এলাকার জন্ম নিবন্ধন করতে পারবো। এবং ভোটার হওয়ার টোকেন নম্বর আছে কিন্তু ছবি ফিংগার প্রিন্ট কিছুই করিনি।আমিকি আমার নিজের এলাকার ভোটার হতে পারবো। Please 🙏 জানাবেন,,

    1. জি নিজ এলাকায় ভোটারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করলেই বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।

  2. খুব সুন্দর একটি তথ্যবহুল পোস্ট। পোস্টটিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, যা পড়ে উপকৃত হয়েছি। আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *