জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার নিয়ম | NID Card Correction 2025
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন প্রক্রিয়া এখন পানির মতন সহজ। যে কেও এখন অনলাইনে ঘরে বসে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করে NID Card Correction করে নিতে পারবে। অনেকেই অনেক কথা বলবে, সবচেয়ে সহজ উপায়ে কিভাবে সংশোধন করবেন সেই ট্রিক্স এবং টিপস আপনাদের শিখিয়ে দিব।
তার আগে জেনে রাখা ভালো, সকল বাংলাদেশি নাগরিক তাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের কোন কোন তথ্য সংশোধন করতে পারবে এবং কত টাকা খরচ পড়বে। আবেদন এর কতদিন সময় পর আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবে সেটাও জানা জরুরী।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন প্রক্রিয়াকে তিনটি (০৩) ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি ক্যাটাগরিতে আলাদা আলাদা তথ্য রয়েছে এবং আলাদা আলাদা সংশোধন ফি নির্ধারিত হয়েছে। ক্যাটাগরি তিনটি হলঃ
- ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন
- অন্যান্য তথ্য সংশোধন এবং
- ঠিকানা (বর্তমান/স্থায়ী) সংশোধন
আর আপনি যদি না জেনে থাকেন যে, কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন করা যায় তাহলে মাত্র ২ মিনিটে জেনে নিন।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন এর নিয়ম
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এরপর, আপনার NID কার্ড নম্বর ও জন্মতারিখ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের পর ফেস ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড তৈরি করা যাবে। ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার পর, প্রোফাইলে গিয়ে “এডিট” বাটনে ক্লিক করে সংশোধনের জন্য আবেদন করা যাবে।
মোট পাঁচটি স্টেপ বা ধাপ অনুসরণ করে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন এর জন্য আবেদন করা যাবে। তবে সংশোধনের জন্য আবেদন করার আগে বেশ কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়বে। আবেদন এর আগে এই তথ্য সমূহ নিজের কাছে রাখা জরুরী, নচেৎ সময় ও শ্রম উভয়ই নষ্ট হবে।
আরও পড়ুনঃ মোবাইল নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করুন
আইডি কার্ড সংশোধন এর ধাপ সমূহ
- সরকারি ওয়েবসাইট এ প্রবেশ
- রেজিস্ট্রেশন
- পুনরায় লগইন
- প্রোফাইল ড্যাশবোর্ড এ প্রবেশ
- এডিট বাটনে ক্লিক করে তথ্য সংশোধনের আবেদন
ধাপ-১ঃ অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
সর্বপ্রথম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর “বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন” অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। ওয়েবসাইটের লিঙ্কটি হচ্ছে https://services.nidw.gov.bd এই সাইট এ প্রবেশ করলে নিচের মত একটি পেজ ওপেন হবে।
এখানে আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করা না থাকলে “রেজিস্টার করুন” বাটনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। আর যদি কেও নতুন ভোটার হতে চান তবে “আবেদন করুন” বাটনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নতুন ভোটারের আবেদন করতে পারবে।
ধাপ-২ঃ রেজিস্ট্রেশন করুন
রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করার পর নিচের ছবির মত একটি ইন্টারফেস চলে আসবে।
এখানে জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ এবং কাপচা কোড পুরন করে সাবমিট করতে হবে।জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন এর জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। কেননা এখানে কোন ভুল তথ্য দিলে অথবা আপনার আইডি কার্ড এর তথ্যের সাথে না মিললে পরবর্তী ধাপে জেতে পারবেন না।
ধাপ-৩ঃ আইডি কার্ড এর ঠিকানা যাচাই করুন
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন আবেদন কারীর ঠিকানা সতর্কতার সাথে যাচাই করতে হবে। কেননা বারবার ভুল তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট লক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা যাচাই করতে তিনটি (০৩) তথ্যের প্রয়োজন হবে।
- বিভাগ
- জেলা এবং
- উপজেলা
সঠিকভাবে নিজ বিভাগ, জেলা এবং উপজেলার তথ্য প্রদান করার পর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করতে হবে। আপনি চাইলে আপনার ভোটার নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করতে পারবেন খুব সহজেই।
ধাপ-৪ঃ মোবাইল নম্বর ও ফেস ভেরিফিকেশন করুন
পরবর্তী ধাপে একটি সচল মোবাইল নম্বর প্রদান করতে হবে। যেখানে ৬ সংখ্যার একটি OTP কোড সহকারে ম্যাসেজ আসবে। মোবাইল নম্বর ভেরিফিকেশন হয়ে গেলে ফেস ভেরিফিকেশন করতে হবে। এর জন্য NID Wallet নামক অ্যাপ এর প্রয়োজন পড়বে।
অ্যাপটি ডাউনলোড এর জন্য Google Play Store থেকে NID Wallet লিখে সার্চ দিয়ে হবে। ডাউনলোড করার পর আইডি কার্ড এর নম্বর এবং জন্ম তারিখ দিয়ে লগইন করতে হবে। লগইন এর পর কম্পিউটারে প্রদর্শিত QR Code টি স্ক্যান করে নিতে হবে।
স্ক্যান করার পর অটোমেটিক কামেরা ওপেন হয়ে যাবে। তারপর ডানে বামে তাকিয়ে চোখ মিটমিট করে যা যা করতে বলবে তা তা করে ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে হবে। জেনে রাখ ভালো যে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি মোবাইল ফোন এর মাধ্যমে করতে হলে আর QR কোড স্ক্যান এর প্রয়োজন পড়বে না।তখন সরাসরি অ্যাপ এ নিয়ে যাবে।
সর্বশেষ এ ইউজার নেম ও একটি শক্ত পাসওয়ার্ড সেট করে রাখতে হবে। যার মাধ্যমে পরবর্তীতে আইডি কার্ড কার্ড সংক্রান্ত সকল সেবার জন্য (যেমন, জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন, জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড, জাতীয় পরিচয় পত্র যাচাই ইত্যাদি) বারবার রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজন পড়বে না। শুধুমাত্র USER ID এবং Password দিয়ে লগইন করলেই সকল সেবা পাওয়া যাবে।
ধাপঃ৫ ইউজার ড্যাশবোর্ড লগইন করুন
সম্পূর্ণ রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ, এবার শুধু সংশোধনের পালা। তার জন্য প্রথমেই ইউজার লগইন করে নিতে হবে। লগইন এর জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর কিংবা ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করে নিতে হবে।
তবে পাসওয়ার্ড ভুলে গেলেও হতাস হবার কোন কারন নাই। কেননা যে মোবাইল নম্বর দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে সেই নম্বর দিয়ে পাসওয়ার্ড পুনরুদ্ধার করা যাবে। আপনি চাইলে আপনার পুরাতন আইডি কার্ড চেক এবং পুরাতন আইডি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করুন
ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে সার্ভারে লগইন করলে প্রোফাইল ড্যাশবোর্ড ওপেন হবে। এখান থেকে “বিস্তারিত প্রোফাইল” বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর এডিট বাটনে ক্লিক করলে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফরম ওপেন হবে। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করে সংশোধনের আবেদন করা যাবে।
টপিক | গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক |
---|---|
সংশোধন | জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন |
ডাউনলোড | জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড |
কি কি লাগে | নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে |
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে কি কি লাগে
জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধনের জন্য SSC কিংবা HSC সার্টিফিকেট, অনলাইন জন্ম সনদ কপি, পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স এ কপি, বিবাহিত হলে বিয়ের কাবিন নামা এবং পিতা মাতার ভোটার আইডি কার্ড এর ডকুমেন্ট লাগে।
- ব্যক্তিগত তথ্যের অধীনে নিজের নাম (বাংলা এবং ইংরেজি), জন্ম তারিখ, জন্ম সনদ নম্বর, পিতা-মাতার নাম এবং পিতা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর সংশোধন করা যাবে।
অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য মূল সার্টিফিকেটের ফটোকপি, ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি, টিন নম্বর ( যদি থাকে), পাসপোর্ট নম্বর, পিতা-মাতার আইডি কার্ড এর তথ্য ইত্যাদি কাগজপত্র লাগবে।
- অন্যান্য তথ্যের অধীনে মোবাইল নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, টিন নম্বর, ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, ধর্ম ইত্যাদি তথ্য সংশোধন করা যাবে।
ঠিকানা সংশোধনের জন্য পিতা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, নিজের সার্টিফিকেট, জমির পর্চা কপি কিংবা খাজনা কপি, বিদ্যুৎ বিলের কপি সহ বেশ কয়েকটি কাগজপত্রের প্রয়োজন হতে পারে।
- ঠিকানা ক্যাটাগরির অধীনে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, MRO, ইউনিয়ন, মৌজা, ওয়ার্ড, গ্রাম, বাসা/হোল্ডিং নম্বর, পোস্ট অফিস, পোস্ট কোড এবং ভোটার এরিয়া ইত্যাদি তথ্য সংশোধন করতে পারা যাবে।
সংশোধন ফি প্রদান
অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন এর জন্য আলাদা আলাদা ফি প্রদান করতে হয়। আমরা অনেকেই জানিনা যে তথ্য সংশোধন এর জন্য কত টাকা খরচ হয়ে থাকে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক।
- ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন ফি ২৩০ টাকা
- অন্যান্য তথ্য সংশোধন ফি ১১৫ টাকা
- উভয় তথ্য সংশোধন ফি ৩৭৫ টাকা
- আইডি কার্ড রি-ইস্যু ফি ২৩০ টাকা (সাধারন)
- আইডি কার্ড রি-ইস্যু ফি ৩৭৫ টাকা (জরুরী)
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাদান
উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে কি কি কাগজপত্র লাগবে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন এর জন্য। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সমূহ আপলোড করতে হবে। তবে সাধারন কিছু কাগজ রয়েছে যা অবশ্যই লাগবে যেকোনো আবেদন এ বা তথ্য সংশোধনে।
দেখে নিতে পারেন নতুন আইডি কার্ড করতে কি কি কাগজপত্র লাগে কিংবা সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে।
এসবের মধ্যে আইডি কার্ড, জন্ম সনদ এর অনলাইন কপি, পিতা মাতার আইডি কার্ড এর কপি, ভাই বোনের আইডি কার্ড, বিদ্যুৎ বিলের কপি কিংবা অন্য যেকোনো ইউটিলিটি বিলের কপি এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স/পাসপোর্ট ইত্যাদি।
সবকিছু আপলোড হয়ে গেলে সর্বোচ্চ ৪৫ কার্যদিবস এর মধ্যেই সংশোধিত আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করা যাবে। তবে সাধারণত ৩ সপ্তাহের মধ্যেই আবেদন গৃহীত হয়ে যায় এবং তা রেডি হলে মোবাইল এ ম্যাসেজ এর মাধ্যমে জানানো হয়ে থাকে। তাই জেনে নিন সংশোধিত আইডি কার্ড ডাউনলোড এর নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন অনলাইন আবেদন
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন (NID Card Correction) অনলাইন আবেদন এর জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে আইডি কার্ড নম্বর, জন্ম তারিখ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের পর ফেইস ভেরিফিকেশন করে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে প্রোফাইল এর এডিট বাটনে ক্লিক করে তথ্য সংশোধন এর আবেদন করা যাবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফরম ডাউনলোড
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফরম ডাউনলোড এর জন্য http://www.ecs.gov.bd/page/download এই লিংকে ক্লিক করে ফরম ডাউনলোড করা যাবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কতদিন সময় লাগে ?
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে সর্বোচ্চ ৪৫ কার্যদিবস সময় লাগে। তবে সাধারণত ৩ সপ্তাহের মধ্যেই আবেদন গৃহীত হয়ে যায়।
সঠিক পরামর্শ দিবেন প্লিজ ।
আমার সার্টিফিকেট এবং এনআইডি কার্ডে আমার বাবার নাম ( MD. AZAD MIAH ) মায়ের নাম ( RUSHNA BEGUM ) আছে ।
বাবার এনআইডি কার্ডে আছে (AJAD MIA ) আর মায়ের এনআইডি কার্ডে আছে (RUSNA BEGUM )।
পাসপোর্ট করতে, স্টুডেন্ট ভিসা নিতে কিংবা সরকারি চাকরি নিতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে কী ?
আমার বোনের সার্টিফিকেটের সাথে মা বাবার এনআইডি কার্ড আবার সেইম।
শুনে ভাল লাগল আপনার বোনের সব ডিটেইলস ঠিক আছে। কিন্তু আপনার তথ্য নিয়ে একটু ঝামেলা হবে। তাই আপনার উচিত আইডি কার্ড সংশোধন করে নেওয়া। বিস্তারিতঃ https://nidwbd.com/nid-card-correction/