ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করুন
অনলাইনে ঘরে বসে ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করতে চাইতেছেন? তাহলে আপনি সঠিক যায়গাতেই রয়েছেন। কেননা এখানে দেখানো মাত্র ৩ টি ধাপ অনুসরণ করে খুব সহজেই মাত্র ৫ মিনিটে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স অনলাইন কপি বের করতে পারবেন।
তবে এই স্মার্ট কার্ড পাওয়ার জন্য আপনাকে জানতে হবে ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করতে কি কি লাগে। যদি সব তথ্য আপনার কাছে থাকে তবে অনলাইনে স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড কোন বিষয়ই না। তো চলুন শুরু করা যাক।
ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড এর পূর্বশর্ত
অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর স্মার্ট কার্ড পেতে হলে আপনাকে বেশ কিছু শর্ত পুরন করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৪ টি ধাপ সহ আপনাকে পার করতে হবে। যার মধ্যে চারটি মৌলিক ধাপ হলঃ
- লাইসেন্স এর জন্য আবেদন
- লার্নার ইস্যু কমপ্লিট
- লার্নার পরীক্ষায় পাস (মৌখিক, লিখিত এবং প্রাক্টিকাল) এবং
- লাইসেন্স এর আবেদন ফি সম্পন্ন।
এছারাও বেশ কিছু আপ্রোভাল বা অনুমোদনের দরকার পরে যার মধ্যে অন্যতম হল বিআরটিএ আপ্রোভাল কমপ্লিট বা সম্পন্ন হতে হবে এবং ই-পেপার লাইসেন্স জেনারেট হতে হবে। আপনার লাইসেন্স জেনারেট হলেই কেবলমাত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। আপনি চাইলে আপনার লাইসেন্স স্ট্যাটাস দেখে শিউর হয়ে নিতে পারবেন।
আপনার লাইসেন্স রেডি হলে আপনার মোবাইল এ একটি ম্যাসেজ আসবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
প্রথমে বিআরটিএ (BRTA) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান। যদি পূর্বে নিবন্ধন করা থাকে, তাহলে “প্রবেশ করুন” বাটনে ক্লিক করুন। যদি নিবন্ধন না করে থাকেন, তবে “নিবন্ধন” অপশনে ক্লিক করে নিবন্ধন সম্পন্ন করুন। এরপর, লাইসেন্স নম্বর বা রেফারেন্স নম্বর এবং জন্ম তারিখ প্রদান করুন। স্ট্যাটাস চেক করার জন্য নির্দেশিত স্থানে তথ্য দিন এবং যদি আপনার স্মার্ট কার্ড প্রস্তুত থাকে, তাহলে সেটি ডাউনলোড করুন।
আপনার কাছে এই বিষয়টি জটিল মনে হলেও হতে পারে। তবে আসলে ব্যাপারটা তা নয়, চলুন সহজ ৫টি ধাপে স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম দেখে নেওয়া যাক।
বিআরটিএ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
সর্বপ্রথম আপনার মোবাইল কিংবা কম্পিউটারের যেকোনো ব্রাউজার দিয়ে যেমন গুগল ক্রোম দিয়ে https://bsp.brta.gov.bd/ এই লিঙ্কে প্রবেশ করুন। এখানে ক্লিক করলে সরাসরি ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড এর ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে।
লগইন/রেজিস্ট্রেশন করুন
এখন আপনি যদি আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করে থাকেন তবে প্রবেশ করুন বাটনে ক্লিক করুন। আপনার ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে নিন। আর যদি আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করা না থাকে তবে নিবন্ধন বাটনে ক্লিক করুন।
আমি ধরে নিলাম আপনার আগে থেকে নিবন্ধন করা নেই অথবা ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন। তাহলে নিচের দুইটি ধাপ ফলো করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন। তার জন্য প্রথমে নিবন্ধন বাটনে ক্লিক করুন অথবা https://bsp.brta.gov.bd/register এই লিঙ্কে যান। আগেই বলেছি যদি আপনার ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড থাকে তবে নিচের দিকে ডাউনলোড এর অপশন পাবেন, যেখানে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে পারবেন।
এখানে প্রবেশ করার পর “আপনার কি কোন অ্যাকাউন্ট নেই? তাহলে এখানে নিবন্ধন করুন” এই লিখাটি দেখা যাবে। তার একটু নিচে জন্ম তারিখ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দেওয়ার একটি ফিল্ড দেখতে পারবেন। এখানে আপনার জন্ম তারিখ এবং ১৩ সংখ্যার কিংবা ১০ সংখ্যার জাতীয় পরিচয়পত্র দিন।
বিঃ দ্রঃ ১৩ সংখ্যার কিংবা ১০ সংখ্যার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর এর আগে আবেদনকারীর জন্ম সাল যোগ করতে হবে। যেমন 2001-1234567890
মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন করুন
ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ এটি। এখানে আপনার মোবাইল নম্বর প্রদান করুন। মনে রাখবেন মোবাইল নম্বরটি অবশ্যই প্রদত্ত জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে রেজিস্টার্ড হতে হবে। আপনি চাইলে দেখে নিতে পারেন মোবাইল নম্বর দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র চেক করা নিয়ম
একটি সচল মোবাইল নম্বর প্রদানের পর অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করুন। এরপর মোবাইলে একটি ৬ সংখ্যার OPT Code বা অটিপি কোড যাবে। এই নম্বরটি কারো সাথে শেয়ার করবেন না। এইবার সেই কোডটি এখানে দিন এবং অটিপি যাচাই করুন বাটনে ক্লিক করুন। এখানে ক্লিক করার সাথে সাথে মোবাইল নম্বর ভেরিফিকেশন হয়ে যাবে। সেই সাথে একটি লেখা চলে আসবে “Your Mobile Number Verification Successful”
অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করুন
এখন আপনার সামনে একটি পেজ চলে আসবে যেখানে আপনার নাম, আপনার প্রদানকৃত মোবাইল নম্বর এবং জন তারিখ দেখতে পারবেন। আপনি যদি আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড চেক করতে চান তবে এখান থেকে করে নিতে পারেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড এর জন্য আর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল একটি পাসওয়ার্ড সেট করা। যেটি ইউজ করে পরবর্তীতে আপনার পোর্টালে লগইন করে সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারেন কোন প্রকার দালাল ছাড়া। এরপর নিবন্ধন বাটনে ক্লিক করে আবেদন নিশ্চিত করুন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করুন
মোবাইলে ম্যাসেজ পাওয়ার পর আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে বিআরটিএ (BRTA) এর ওয়েবসাইটে লগইন করুন। এরপর, “ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন” অপশনে যান। সেখান থেকে “ই-পেপার ড্রাইভিং লাইসেন্স” অপশনে ক্লিক করে ডাউনলোড করুন। এতে দুই পৃষ্ঠার একটি PDF ফাইল ডাউনলোড হবে, যেখানে দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় আপনার স্মার্ট কার্ডের ডিজিটাল কপি দেখতে পাবেন। তারপর সেই অংশটি ক্রপ করে কেটে নিয়ে কাছের কোনো কম্পিউটার দোকানে গিয়ে লেমিনেট করে নিতে পারবেন।
অনলাইনে যে কপি পাবেন আর আপনাকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে যে স্মার্ট কার্ড পাঠানো হবে দুইটা একই। শুধু অনলাইন স্মার্ট কার্ড এ মাইক্রো চিপ মানে সিম কার্ড এর মত অপশনটি থাকবে না। আর সকল কিছু কোন পরিবর্তন নেই। এটি দিয়ে আপনি যেকোনো কাজ করতে পারবেন কোন পুলিশি ঝামেলা ছাড়াই। তারপর যখন আপনার অরিজিনাল স্মার্ট কার্ড আসবে তখন আর এটির প্রয়োজন হবে না।
তারপর আপনি যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করেন তবে এখানে লিখা আসবে প্রিন্টিং কমপ্লিট এবং সর্বশেষ আপনি যদি অরিজিনাল কপি ডেলিভারি পেয়ে থাকেন তবে স্ট্যাটাস এ দেখাবে লাইসেন্স ডেলিভারি কমপ্লিট। আসা করি পুরো বিষয়টি আপনাদের বুঝাতে সক্ষম হয়েছি।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড কিভাবে পাবো?
প্রথমে বিআরটিএ ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে। তারপর লিখিত, মৌখিক এবং প্রেক্টিকাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। সর্বশেষ লানার ইস্যু করে লাইসেন্স ফি জমা দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করা যাবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে কত দিন লাগে?
এখন এক দিনে আঙুলের ছাপ, ছবি তোলা ও পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব। আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর ১৫ দিনের মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত হয়ে যাবে। প্রস্তুত হওয়ার পর, বিআরটিএ (BRTA) কর্তৃপক্ষ সেই লাইসেন্স আবেদনকারীর ঠিকানায় বাড়িতে পৌঁছে দেবে। তবে অনলাইন থেকে ডিজিটাল কপিও ডাউনলোড করা যায়।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে ২০২৪?
প্রথমেই বিআরটিএ (BRTA) থেকে লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। এর জন্য নির্ধারিত ফি অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। ১টি ক্যাটাগরির জন্য (যেমন: শুধু কার) ফি হলো ৫১৮ টাকা, এবং ২টি ক্যাটাগরির জন্য (যেমন: কার ও মোটরসাইকেল) ফি ৭৪৮ টাকা। অপেশাদার লাইসেন্সের জন্য সর্বমোট ৪,৪৯৭ টাকা (মেয়াদ: ১০ বছর) এবং পেশাদার লাইসেন্সের জন্য ২,৭৭২ টাকা (মেয়াদ: ৫ বছর) অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে।
ড্রাইভিং শিখতে কত দিন লাগে?
তিন মাসের কম সময়ে লাইট ভেহিকেল ড্রাইভিং শেখা সম্ভব, যা সাধারণত ৬-৮ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে থাকে, তবে তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে খরচ কিছুটা বেশি হতে পারে। এটি একটি কারিগরি বা পেশাজীবী দক্ষতা। ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ এই যোগ্যতা থাকলে সহজেই পারিবারিক গাড়ি রাখা এবং নিজে চালানো সম্ভব।