ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে ২০২৪
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে, নবায়ন করতে কত টাকা লাগে এবং স্মার্ট কার্ড বের করতে কত টাকা লাগে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে। শুধু তাই নয় লাইসেন্স করতে কি কি কাগজপত্র লাগে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পেশাদার, অপেশাদার এবং লার্নার এই তিন ধরনের লাইসেন্স এর জন্য তিন ধরনের ফি রয়েছে। তাই ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আপনাকে এই তিনটি বিষয় সম্পর্কেও জানতে হবে।
এই পেশাদার, অপেশাদার এবং লার্নার এর মধ্যে হালকা, মধ্যম এবং ভারি ক্যাটাগরি রয়েছে। প্রত্যেকটি ক্যাটাগরির জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা ফি। নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে বিআরটিএ (BRTA) ওয়েবসাইট কিংবা সরাসরি গিয়ে আবেদন করতে হয়।
বাংলাদেশের মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর ৩ নং ধারা অনুযায়ী, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কোনো ব্যক্তি সর্বসাধারণের ব্যবহৃত রাস্তায় গাড়ি চালাতে পারবেন না, তাই ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির পদ্ধতি জানা অত্যাবশ্যক।
লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে
লার্নার এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হল Learner যার অর্থ যে লোক শিক্ষা গ্রহন করে বা প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন তিনি। ড্রাইভিং লাইসেন্স করার আগে সর্বপ্রথম এই লার্নার লাইসেন্স এর আবেদন করতে হয়। তারপর ভাইভা, লিখিত এবং প্রেক্টিকাল বা ব্যাবহারিক পরীক্ষায় পাশ করলেই ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করা যাবে।
লার্নার লাইসেন্স এর জন্য নির্ধারিত আবেদন ফরম পুরন করে অনলাইনে নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হয়। লার্নার এর দুইটি ক্যাটাগরি রয়েছে। ক্যাটাগরি-১ এ মোটরসাইকেল বা হালকা যানের যেকোনো একটির ক্ষেত্রে ৩৪৫ টাকা এবং উভয়ের জন্য ৫১৮ টাকা লাগে এবং ক্যাটাগরি-২ এর জন্য ৭৪৮ টাকা লাগে। এই টাকা অনলাইনে পরিশোধ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে আবেদন করতে হয়।
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে
আগে চলুন জেনে নিই পেশাদার, অপেশাদার এর মধ্যে তিনটি ক্যাটাগরি যেমন হালকা, মধ্যম এবং ভারি লাইসেন্স এর কিছু বেসিক ধারনা সম্পর্কে।
লাইসেন্সের ধরন | বয়স | গাড়ির ওজন |
---|---|---|
হালকা মোটরযান | নূন্যতম বয়স ২০ বছর | ২৫০০ কেজির নিচে |
মধ্যম মোটরযান | কমপক্ষে ২৩ বছর | ২৫০০ থেকে ৬৫০০ কেজি |
ভারী মোটরযান | নূন্যতম বয়স ২৬ বছর | ৬৫০০ কেজির বেশি |
দক্ষতা পরিক্ষা যেমন লিখিত, মৌখিক এবং ব্যাবহারিক পরীক্ষায় পাশ করার পর অপেশাদার লাইসেন্স ১০ বছরের জন্য করতে ৪৪৯৮ টাকা লাগে। তবে এর সাথে ৬০ টাকা অনলাইন কুরিয়ার সার্ভিস ফি লাগে।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য লার্নার কপি সহ সকল পরীক্ষায় পাস করতে হবে। এই লাইসেন্স সাধারণত ৫ বছরের জন্য হয়। ৫ বছরের জন্য এই লাইসেন্স করতে ২৭৭২ টাকা লাগে।
উল্লেখ্য এক্ষেত্রে বিআরটিএ কর্তৃক নির্ধারিত ব্যাংকে সরেজমিনে/ব্যাংক কাউন্টার এ ফি প্রদানের কোনো সুযোগ নেই।
আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে
আন্তর্জাতিক লাইসেন্স করতে ২৫০০ টাকা লাগে এবং এর মেয়াদ থাকে সাধারণত তিন বছর। তবে এই লাইসেন্স এর মেয়াদকাল দেশবেধে আলাদা হতে পারে। অনেকেই আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্সকে মূল লাইসেন্স এর বিকল্প ভেবে থাকেন। অর্থাৎ মনে করে যে এর যেকোনো একটা হলেই হল, আসলে ব্যাপারটা তা নয়। অন্য সকল লাইসেন্স এর মত এটারও নবায়ন করতে হতে পারে।
অপেশাদার লাইসেন্স নবায়ন করতে কত টাকা লাগে
অপেশাদার লাইসেন্স করতে করতে প্রায় ৪৫০০ টাকা লাগে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় মেয়াদ উত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে নবায়ন করতে ৪২১২ টাকা লাগে। অপরদিকে মেয়াদ শেষ হবার ১৫ দিন পর করতে মূল টাকার সাথে প্রতি বছরের জন্য ৫১৮ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
এই টাকা অনলাইনে জমা দিয়ে যেকোনো বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে গিয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনের সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে নিয়ে গেলে সাথে সাথে বায়োমেট্রিক গ্রহন করা হবে। তারপর মোবাইল এর ম্যাসেজের মাধ্যমে লাইসেন্স গ্রহণের একটি কনফার্মেশন ম্যাসেজে জানিয়ে দেয়া হবে।
পেশাদার লাইসেন্স নবায়ন করতে কত টাকা লাগে
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে তা জানতে পারেছেন এবং কত টাকা লাগে সেটিও আপনার অজানা নয়। এখন কথা হচ্ছে এই লাইসেন্স নবায়ন করতে হলে আপনাকে পুনরায় প্রাক্টিকাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে এবং পরীক্ষায় পাস করলেই এই লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে।
পরীক্ষায় পাশ করার পর মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে পেশাদার লাইসেন্স নবায়ন করতে ২৪৮৭ টাকা জমা দিয়ে নির্দিষ্ট অফিসে গিয়ে আবেদন করতে হবে। অপরদিকে মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের পরে নবায়ন করতে মূল ফি এর সাথে প্রতি বছরে ৫১৮ টাকা জরিমানা লাগে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স রিনিউ করতে কত টাকা লাগে ২০২৪?
পেশাদার লাইসেন্স নবায়ন করতে ২৪৮৭ টাকা এবং অপেশাদার লাইসেন্স নবায়ন করতে ৪২১৫ টাকা লাগে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি লাগে 2024?
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হলে আবেদন ফরম, আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, সদ্য তোলা রঙিন ছবি (৩০০ x ৩০০ পিক্সেল), রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক প্রদত্ত মেডিকেল সনদ, ঠিকানা প্রমাণের জন্য ইউটিলিটি বিলের কপি জমা দিতে হবে। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদও প্রয়োজন।