পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নতুন নিয়ম ২০২৫

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় একটি ট্রিকস আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। পুরাতন আইডি কার্ড বলতে যে সকল আইডি কার্ড এর রেজিস্ট্রেশন হয়েছে আজ থেকে প্রায় অনেক বছর আগে সেসব আইডি কার্ডকে বোঝায়।

২০১৬ বা ২০১৭ সালের আগের ভোটারগন সরাসরি আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবে না। তবে অনলাইনে রি-ইস্যু ফি দিয়ে আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবে। যাদের আইডি কার্ড (NID Card) হারিয়ে গেছে কিংবা খুজে পাচ্ছেন না অথবা অনেক আগে ভোটার হয়েছেন কিন্তু এখনো আইডি কার্ড হাতে পান নি তাদের জন্য এই পোস্ট।

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড কি কি কাজে লাগে

আমরা অনেকেই আমাদের পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড কি কি কাজে ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে অবগত নই। এই পুরাতন আইডি কার্ড অনেক কাজে লাগে। চলুন জেনে নিই এই পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড আমাদের কি কি কাজে লেগে থাকেঃ

• বিদেশ ভ্রমণ
• সিম রেজিস্ট্রেশন
• ব্যাংকিং সেবা
• চাকরির আবেদন
• অ্যাপস ভেরিফিকেশন ইত্যাদি

আপনি যদি না জেনে থাকেন আইডি কার্ড করতে কি কি লাগে তাহলে বিস্তারিত জেনে নিন মাত্র ১ মিনিটে।

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম ২০২৫

পুরাতন আইডি কার্ড ডাউনলোড এর জন্য প্রথমে থানায় জিডি (General Diary) করতে হবে। তারপর NIDW BD ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করার পর পুনরায় লগ ইন করে রি-ইস্যু ফি প্রদান করে আবেদন করতে হবে। আবেদন গৃহীত হলে পুরাতন আইডি কার্ড ডাউনলোড করা যাবে।

নিচে অনলাইন থেকে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার উপায় ধাপ ধাপে আলোচনা করা হয়েছে। আর একটি কথা আপনার আইডি কার্ড এর যদি কোন তথ্য সংশোধন করার থাকে তবে সহজেই জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন এর আবেদন করতে পারবেন।

এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি আপনাদের সাথে ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হয়েছে। আসা করি এই নিয়মগুলো অনুসরণ করলে খুব সহজেই পুরাতন আইডি কার্ড ডাউনলোড সহ বিস্তারিত জানতে পারবেন।

Old NID Card Download Steps:

• থানায় জিডি করা
• service.nidw.gov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা
• রি-ইস্যু আবেদন করা
• নির্দিষ্ট পরিমান টাকা পরিশোধ করা
• পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড

১। থানায় জিডি (GD) করা

ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে প্রথমত থানায় আইডি কার্ড হারানোর বিষয়ে একটি জিডি করতে হবে। থানায় কর্মরত একজন এর থেকে জিডি কপি সংগ্রহ করতে হবে। জিডি কপিতে একটি জিডি নম্বর দেওয়া থাকবে সেটাও সংরক্ষন করা জরুরি।

জিডি তে আইডি কার্ড হারানোর সম্ভাব্য সময়, তারিখ, স্থান উল্লেখ করতে হবে। সেই সাথে নিজের নাম, জন্ম তারিখ এবং নিজের পুরাতন আইডি কার্ড নম্বর ইত্যাদি তথ্য সহকারে আবেদন করতে হবে।

সেই জিডি কপিতে থানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক জিডি নম্বর এবং আবেদন পত্রে কর্মকর্তার সিল ও সাক্ষর গ্রহন করতে হবে। তারপর জিডি আবেদন হয়ে গেলে কোন কম্পিউটার দোকানে কিংবা আমাদের দেখানো নিয়মে সরকারি ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।

২। সরকারি ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন

জিডি করা সম্পন্ন হলে ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার দিয়ে NIDW BD অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যদি আগে থেকে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে তাহলে রেজিস্ট্রেশন এর সময়ের ইউজার নেইম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করতে হবে।

সরকারি ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক টি হচ্ছে services.nidw.gov.bd এই লিঙ্ক এ প্রবেশ করলে নিচের মত একটি ইন্টারফেস চলে আসবে। সেখান থেকে নতুন ভোটার এর জন্য আবেদন করা যাবে, অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা যাবে এবং আগে থেকে রেজিস্ত্রেশন থাকলে লগইন করা যাবে।

রেজিস্ট্রেশন করতে আপনার আইডি কার্ডের নম্বর এবং জন্ম তারিখের তথ্যের প্রয়োজন হবে। আপনি চাইলে ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম এটা দেখে দেখে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে পারেন। আচ্ছা, ধরে নিচ্ছি আপনি রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেছেন।

এবার পুনরায় ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করে নিন। লগইন করে প্রোফাইল সেকশনে গেলে নিচের দিকে রি ইস্যু করার একটি অপশন দেখতে পারবেন।

৩। রি-ইস্যু আবেদন

ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করার পর নিচের মত একটি পেজ চলে আসবে। এখন “রি-ইস্যু” অপশন এ ক্লিক করতে হবে। তারপর খেয়াল করে দেখুন উপরের ডান দিকে “এডিট” বাটন রয়েছে। এই বাটনে ক্লিক করতে হবে।

এখানে বেশ কিছু তথ্যের প্রয়োজন পরবে। যেমন, জিডি নম্বর, থানা, পুনর্মুদ্রণ কারন, পুলিস অফিসারের নাম, পুলিস অফিসারের পদবি এবং জিডির তারিখ ইত্যাদি।

জেনে রাখা উচিত রি-ইস্যুর জন্য কিংবা পুরাতন আইডি কার্ড ডাউনলোড এর জন্য সর্বমোট চারটি (০৪) পর্যায় বা ধাপ রয়েছে।

• এডিট
• ট্রানজেকশন
• কাগজপত্র জমাদান
• নিশ্চিতকরণ

তার মানে আপনি রি ইস্যু আবেদন করা মানে আপনার এডিট অপশন এর কাজ শেষ। এখন আপনাকে ট্রানজেকশনের কাজ করতে হবে মানে রি ইস্যু আবেদনের জন্য টাকা জমা দিতে হবে।

৪। রিইস্যু ফি পরিশোধ করা

অনলাইনে রি-ইস্যু ফি জমা দেওয়ার আগে বেশ কিছু তথ্য জেনে নিলে আবেদন সহজ হয়। মুলত দুই ধরনের আবেদন করা যায় যার মধ্যে একটি জরুরি এবং অপরটি সাধারন। জরুরি ও সাধারন এই দুইটি ক্যাটাগরিতে আবেদন ফি পরিশোধ করা যাবে। জরুরি আবেদন এর ক্ষেত্রে রি ইস্যু ফি ৩৪৫ টাকা এবং সাধারন আবেদন এর ক্ষেত্রে আবেদন ফি ২৩০ টাকা ধার্য করা হয়েছে।

আপনার সর্বমোট কত টাকা হয়েছে তা https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/fees এই লিঙ্ক থেকে জেনে নিতে পারবেন। একে এন আই ডি ফি ক্যালকুলেটর বলা হয়ে থাকে।

৫। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড এর জন্য রি-ইস্যু আবেদন এর টাকা জমা দেওয়া হয়ে গেলে এখন প্রয়োজনীয় সকল কাগজ পত্র জমা দিতে হবে যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাগজ হচ্ছে জিডি কপি।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন ডকুমেন্টস গুলো স্পষ্ট ভাবে তুলা হয়। বেশি ভাল হয় স্ক্যান কপি জমা দিলে, কেননা তাহলে আলোর দিকে খেয়াল রাখতে হয় না। আবেদন পত্র সাবমিট করার ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে আবেদন গৃহীত হয়ে যায়।

পুরাতন আইডি কার্ড চেক অনলাইন

রি-ইস্যু আবেদনটি অনুমোদিত হয়ে গেলে নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। তারপর services.nidw.gov.bd লিংক এ প্রবেশ করে ইউজার নেইম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। লগ ইন এর পর প্রোফাইল ড্যাশবোর্ড থেকে আইডি কার্ড এর তথ্য চেক করতে পারবেন।

পুরাতন আইডি কার্ড ডাউনলোড

আইডি কার্ড চেক করে কোন প্রকার ভুল না থাকলে এবার প্রোফাইল এর ড্যাশবোর্ড থেকে আইডি কার্ড ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। আপনি কম্পিউটার থেকে Ctrn + P প্রেস করলে আপনা আপনি পিডিএফ ডাউনলোড হয়ে যাবে।

পিডিএফ পরবর্তীতে কম্পিউটার দোকান থেকে প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করে নিলেই কাজ শেষ। তখন এই আইডি কার্ড স্মার্ট কার্ডের মতই যেকোনো কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।